এইচ. এম. খলিল বাকেরগঞ্জ ( বরিশাল)
বরিশাল বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাটী ইউনিয়নে পান্ডব নদীর তীর কেটে দুই শতাধিক ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে প্রতিনিয়ত মাটি ভর্তি করে নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। ইটভাটার মালিকেরা তাদেরকে দাদন দিয়ে কাটাচ্ছে মাটি।ভোর থেকে সন্ধ্যা অবধি চলছে নদীর তীর কেটে মাটি উত্তোলনের মহােউৎসব। এ নিয়ে নতুন করে নদীর তীর কাটা রোদে স্থানীয় গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে কয়েক দফায় বাধা প্রদান করা হলেও ইঞ্জিন চালিত টলার মালিক পক্ষ ও মাটি বোঝাই কারি শ্রমিকরা তা মানছে না। ফলে পাণ্ডব নদীর পশ্চিম তীরের দক্ষিণ শাদিস এলাকায় গত এক সপ্তাহে কমপক্ষে নতুন করে আরো দের, দুই, কিলোমিটার তীর কেটে ফেলা হয়েছে। এতে নদীর তীর ক্রমশ ভাঙছে আর বাড়ছে এলাকাবাসীর মধ্যে ঘরবাড়ী হারানোর আতঙ্ক। গত মঙ্গলবার সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাণ্ডব নদীর তীর দক্ষিণ শাদিস এলাকায় সারিবদ্ধ ভাবে পেরায় দেড় দুই শতাধিক ইঞ্জিন চালিত টলার নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে চলছে নদীর তীর কেটে টলারে মাটি ভরাট করার মহােউৎসব। দক্ষিণ শাদিস, শাদিস আমতলী, বাগদিয়া, নারাঙ্গগল গ্রামের স্থানীয় অর্ধ শতাধিক লোক এসে সম্মিলিত ভাবে নদীর তীর কাটতে বাধা দিলেও টলার মালিক ও শ্রমিকরা তা উপেক্ষা করে নদীর তীর কেটে টলারে মাটি ভরাট করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পরে লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে বেশ কিছু টলার মাঝ নদীতে চলে যায়। এলাকার লোকজন জানান গত ১০ – ১২ বছর ধরে নদীর তীর কেটে টলারে মাটি ভর্তি করার কাজ শুরু হয়। ভোরবেলা টলার নদীর তীরে ভিড়িয়ে ইচ্ছামত দিনভর, একটার পর একটা, টলারে, শ্রমিকরা তীর কেটে মাটি ভরাট করে নিয়ে যাচ্ছে। এতে নদীর মুখ ক্রমশ বড় হয়ে পড়ায় এলাকার বেশ কিছু রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট ভেঙ্গে গেছে। নদী ভাঙ্গন আর তীর কাটা অব্যাহত থাকায় গত কয়েক বছরে দক্ষিণ শাদিস, শাদিস আমতলী, বাগদিয়া, নারাঙ্গগল গ্রামের পেরায় দুই হাজার পরিবার তাদের ভিটা মাটি ঘরবাড়ি হারিয়ে এখন পথে বসে গেছে। অনেক পরিবার কারো একটু বারান্দায় আশ্রয় নিয়েছে। কেহ আবার রাস্তার পাশে টং বানিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করেছে। কিছু পরিবার বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে কোনমতে আছেন। তাদের মধ্যে অনেকের বাসা ভাড়া পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এতকিছুর পরেও লোকাল প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন ভূমিহীনদের সরকারি খাস জমি পেতে পারে এ ব্যাপারে প্রশাসনিক ভাবে তেমন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। যারা খাস জমি পাওয়ার আবেদন করেছেন, তারা উপজেলা ভূমি অফিস ও জেলা ডিসি অফিসে ঘোরাঘুরি করতে করতে এখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যদি একটু সুদৃষ্টি দেন, সেই কামনাই করেছেন এলাকাবাসী।
Leave a Reply