জাহিদুল ইসলাম ///
বাকেরগঞ্জ উপজেলা মৎস্য দপ্তরের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা রাকিব হাসানের ব্যার্থতা ও পরোক্ষভাবে সহায়তায় অজ্ঞাত কারণে নিষিদ্ধ সময়ে মহা ধুমধামে চলছে মা ইলিশ নিধনের মহা উৎসব। প্রতি বছরের ন্যায় এবারে ও সারা দেশে ইলিশ প্রজণন মৌসুমে ১৪ ই অক্টোবর থেকে ৪ই নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ সম্পদ রক্ষায় উক্ত সময়ে মা ইলিশ ধরা পরিবহন ও বিক্রি নিষিদ্ধ সময়। এই সময়ে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী মাছ শিকার করলে জেল জরিমানা সহ উভয় দন্ডে দন্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ জেলেদের জন্য সরকারি ভাবে মানবিক সহায়তা ও ঘোষণা করা হয়।
বিগত বছরগুলোতে এই নিয়ম মেনে চলতে জেলেদের বাধ্য করতে প্রশাসনিক ভাবে অভিযান চালিয়ে ব্যপক ধরপাকর জরিমানা আদায় সাপেক্ষ বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় করা হলে নদীতে জেলে নৌকা ছিলো শূন্যের কোঠায়। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হলো এবছর নিষিদ্ধ সময়ে দেখা যাচ্ছে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র।
উপজেলার পান্ডব, তুলাতলি, পায়রা,কারখানা, গোমা, রাঙ্গাবালী, সিমান্ত সব গুলো নদীতে চলছে বেপরোয়া ইলিশ নিধন উৎসব। আর এই উৎসবে মেতে মৎস্য কর্মকর্তা রাকিব হাসান চালিয়ে যাচ্ছেন নিরব বানিজ্য এমনটাই ধারণা পোষণ করছেন অভিজ্ঞ মহল। খোঁজ নিয়ে জানা যায় উপজেলা ব্যাপী ৩৭৬৯ জন তালিকা ভুক্ত জেলের বিশাল অংশ ভূয়া যাদের নেই সামান্য তম মাছ শিকারের অভিজ্ঞতা। তা সত্বেও তাদের নামে সরকারি বরাদ্দের বিশাল অংশ চলে যাচ্ছে মধ্যস্থভোগীদের পকেটে। প্রকৃত কয়েকশো জেলেদের মধ্যে ইলিশ মাছ শিকারী জেলেদের সংখ্যা হাতে গোনা কয়েকশো, আর ভুক্তভোগী জেলেদের সংখ্যা ২০০ জন ও নয়। অথচ তাদের ও অনেকের সরকারি সহায়তা পেতে নানান হয়রানির স্বীকার হতে হচ্ছে। এ রকমের কোন প্রকার যাচাই-বাছাই ছাড়াই চলছে সরকারি বরাদ্দের বিশাল বানিজ্য ও লুটপাট আর এ সন্মূন্বয়হীনতার কারণে জেলেদের মধ্যে ব্যপক ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজমান। যেকারণে অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই নিষিদ্ধ সময়ে তারা মা ইলিশ নিধন চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ বহিরাগত পোলাপান নিয়ে অবৈধ অস্ত্র সজ্জিত হয়ে জোট বেঁধে মাছ শিকার করে চলছেন। আর দুর্বল ইলিশ ও শিকার হচ্ছে ঝাঁকেঝাঁকে, সেগুলো বিক্রি ও হচ্ছে অনেকটা সুকৌশলে কম দামে ৩/৪ হাজার টাকার বাজার মূল্যর ইলিশ নদীর চরে অথবা গ্রাম্য বাজারে মাত্র ৮/৯ শত টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ মৎস্য প্রশাসনের নাকের ডগায় এমনটা ঘটে চললেও নেই কোনো সাফল্য জনক অভিযান।
এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাধবী রায়ের মুখামুখি হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান অদ্য নিষিদ্ধ সময়ের ১৬ দিনে ব্যপক লোকবল সংকটের মধ্যে ও ৩০ টি অভিযান হয়েছে যার ২৬ টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১ লাখ ৫০ হাজার মিটার জাল জব্দ করা হয়েছে। ৩ জন জেলেকে স্বাস্তি দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে যার দুজন শর্শী ও একজন কলসকাঠির আর একজনকে ১০০০ টাকা জরিমানা আদায় সাপেক্ষ ছেড়ে দিয়েছি। এছাড়া নিয়ামতি পুলিশ ফাঁড়িতে ২ জনকে আটক করে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে অভিযান চলেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এটুকুই যথেষ্ট কিনা জানতে চাইলে তিনি বিষয় টি এড়িয়ে যান। তার দেওয়া তর্থ্যর অভিযুক্তদের পরিচয় জানতে চাইলে উপস্থিত মৎস্য কর্মকর্তা রাকিব হাসান জানান সেটা তার কাছে অফিসে রয়েছে। কিন্তু তার অফিসে গিয়ে পূনরায় তথ্য চাইলে তিনি সেটা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
উপজেলা প্রশাসনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের পরিবর্তে উল্টো জেলেদের সাথে কন্টাক্ট করে উপজেলা মৎস্য দপ্তর বিপুল পরিমাণ বানিজ্য বখরায় লিপ্ত, নাম মাত্র লোক দেখানো অভিযানে নামার পূর্বে জেলেদের সতর্ক সংকেত দিয়ে দেন। যে কারণে ব্যার্থ অভিযানের নামে চলছে ইলিশ নিধনের মহা উৎসব। এতে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।
এ বিষয় থানা অফিসার ইনচার্জ আবুল কালামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান মৎস্য অভিযানের জন্য পর্যাপ্ত পুলিশ ফোর্স প্রস্তুত রয়েছে। মৎস্য দপ্তরের প্রয়োজনে তারা সব রকমের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। তারপর ও বিপুল পরিমাণ ইলিশ নিধনের অভিযোগ আসছে। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। মৎস্য দপ্তরের কাজে কোনো গাফিলতি থাকলে তার দ্যায়ভার তাদেরই।
এমন লাগামহীন মা ইলিশ নিধনে বিস্মিতবা বাকেরগঞ্জ উপজেলার সাধারণ মানুষের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তারা অনতিবিলম্বে বিষয় টি সরকারি দায়িত্বরত প্রশাসনের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
Leave a Reply