আরশিনগর নাট্যদল আবারও মঞ্চে আনছে জনপ্রিয় প্রযোজনা “সিদ্ধার্থ”। এই নাটকটি নোবেল বিজয়ী জার্মান সাহিত্যিক হেরমান হেসের বিখ্যাত উপন্যাস “সিদ্ধার্থ” অবলম্বনে নির্মিত। উপন্যাসটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন জাফর আলম এবং নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন রেজা আরিফ।
নাটকটির মূল চরিত্র সিদ্ধার্থ, যিনি একজন ব্রাহ্মণ কুমার। তিনি জীবনের অর্থ খোঁজার জন্য ঘর-বাড়ি ছেড়ে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। তিন বছর কঠোর সাধনা করার পর তিনি বুদ্ধের দর্শন লাভ করেন। কিন্তু বুদ্ধের শিষ্যত্ব গ্রহণ না করে নিজের পথেই চলতে থাকেন। এই যাত্রায় তিনি নগরের সেরা বারাঙ্গনা থেকে সংসার ও সন্তানলাভের খেলা পর্যন্ত নানা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত তিনি নদীর কাছে আশ্রয় নেন এবং জীবনের বৃহত্তর অর্থ উপলব্ধি করেন।
নাটকটি প্রযোজনার ক্ষেত্রে চরিত্রের অভিজ্ঞতা ও জীবনোপলব্ধির উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মঞ্চ সাজানো হয়েছে সহজভাবে, পোশাকগুলো নাট্যধর্মী এবং আলো ব্যবহার করা হয়েছে পরিশিলিত ভাবে।
আরশিনগর নাট্যদল ২০১২ সালে যাত্রা শুরু করে। ইতোমধ্যে তারা “রহু চণ্ডালের হাড়”, “সে রাতে পূর্ণিমা ছিল”এর মতো কিছু সফল প্রযোজনা উপহার দিয়েছে। “সিদ্ধার্থ” তাদের চতুর্থ প্রযোজনা।
এ পর্যন্ত নাটকটির বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী সফলভাবে মঞ্চস্থ হয়েছে এবং খুব শিগগিরই এটি আবার মঞ্চে আসছে। অভিনয়ে রয়েছেন কাজী নওশাবা আহমেদ, মাঈন হাসান, পার্থ প্রতিম হালদারসহ আরও অনেকে।
নাটকটির কস্টিউম ডিজাইন করেছেন জিনাত জাহান নিশা ও নুসরাত জাহান জিসা এবং মঞ্চ ও আলো পরিকল্পনা করেছেন অনিক কুমার। কোরিওগ্রাফির দায়িত্বে ছিলেন নুসরাত জাহান জিসা ও আকাশ সরকার।
নাটকটি দেখার পর এক দর্শক বলেন, “সিদ্ধার্থ আমাদের জীবনের নানা দিক নিয়ে নতুনভাবে ভাবতে শিখিয়েছে। প্রতিটি চরিত্র, প্রতিটি দৃশ্য আমাদের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে।”
নাটকটি নিয়ে নাট্যজনরাও প্রশংসা ও সমালোচনায় মুখর। বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্বরা বলছেন, সিদ্ধার্থের মতো জটিল ও গভীর একটি উপন্যাসকে এতো বড় ক্যানভাসে মঞ্চে নিয়ে আসা এবং তা এতো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা দেখে অভিভূত। প্রতিটি চরিত্রের অভিনয়, মঞ্চসজ্জা এবং আলো-ছায়ার ব্যবহার দর্শকরা মনোযোগ দিয়ে উপভোগ করেছে।
তবে কিছু সমালোচনাও উঠে এসেছে। কেউ কেউ মনে করেছেন, নাটকের কিছু অংশ আরও সংক্ষিপ্ত করা যেত, এবং কয়েকটি দৃশ্যের সংলাপে আবেগ আরও গভীরভাবে প্রকাশ করা যেত। তবে সামগ্রিকভাবে নাটকটি দর্শক ও নাট্য সমালোচকদের কাছ থেকে ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে।
নাটকটির সাফল্যের জন্য আরশিনগর কৃতজ্ঞ সকল সহযোগী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি। খুব শিগগিরই তারা নতুন প্রদর্শনীর তারিখ ঘোষণা করবে।
আপনার মতামত লিখুন :